শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৯ অপরাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্কঃ মধু এমন আশ্চর্য এক ওষধি গুণ সম্পন্ন উপাদান যা হাজার হাজার বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রাকৃতিকভাবেই মিষ্টি স্বাদযুক্ত এই পদার্থের অনেক উপকার রয়েছে। অন্ত্র পরিষ্কার করা, কণ্ঠনালীর অস্বস্তি প্রশমিত করা, ত্বকের সমস্যা ও সাইনাসের উপসর্গগুলো দূর করা- এমন অনেক কাজে এটি অতুলনীয়।
পারিবারিকভাবে আমরা বাবা-মায়ের কাছ থেকেই জানতে পারি অসুস্থতা থেকে মুক্তি পেতে মধু কীভাবে আমাদের উপকার করে। লোভনীয় স্বাদের জন্য এটি অল্পবয়সী কিংবা বৃদ্ধ সবাই পছন্দ করে। অনেকে চা কিংবা দুধের সঙ্গে চিনির বিকল্প হিসেবে মধু ব্যবহার করে।
কিন্তু আপনি কী জানেন, গরম সবকিছুতে মধুর মিশ্রন ভয়ানক বিপদ ডেকে আনতে পারে? নিচে এমন কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হলো:
১। গরম পানি কিংবা দুধে
সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা অনেকে গরম পানিতে মধু মিশিয়ে পান করতে অভ্যস্ত। অনেকের বিশ্বাস, এতে শরীর তাজা হয় এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যায়। ধারণাটি একদম ভুল। যদি আপনার প্রতিদিনের এই অভ্যাস থাকে, তবে এখনি তা বন্ধ করা উচিত। আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা মনে করেন, এভাবে আপনি যা পান করছেন তা আসলে বিষ।
২। বিষ থেকে নিরাপদ থাকুন
প্রতিদিনের স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য আপনি যা পান করছেন তা আসলে বিষাক্ত বা বিষ কি-না, তা একবার জেনে নিন ভালো করে। অনেকেই জানেন না যে মধু কখনো গরম কিংবা রান্না করা উচিত নয়। আয়ুর্বেদীয় শাস্ত্র এটি কখনো সমর্থন করে না।
৩। আয়ুর্বেদ কী বলে?
আয়ুর্বেদীয় পদ্ধতি অনুসারে, মধু তখনি উপকারী যখন এটি প্রাকৃতিক অবস্থায় থাকে। অন্যদিকে, গরম মধু শরীরে বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন করে। এতে হজম প্রক্রিয়াসহ বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। গরম করা মধু ধীরে ধীরে শরীরে মিশে যায় এবং একসময় তা বিষে পরিণত হয়।
৪। মধু সবসময় প্রাকৃতিক অবস্থায় খাওয়া উচিত
এই নিয়মটি সুপারমার্কেট থেকে কেনা মধুর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, কারণ এটি সাধারণত চরম তাপমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত হয়। এ সময় এটি নিজেই বিষাক্ত উপাদানে পরিণত হয়। কেননা, এটি ব্যাপকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংরক্ষণ করা হয় প্লাস্টিকের পাত্রে।
৫। কীভাবে খাওয়া উচিত?
মধু নিঃসন্দেহে একটি বহুবিধ উপকারী উপাদান। কিন্তু এটি খেতে হবে সঠিক নিয়মে। সুতরাং, অবশ্যই এটি আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সেক্ষেতে সর্বোত্তম উপায় হলো এটি সংগ্রহ করতে হবে এর মূল উৎস থেকে এবং খেতে হবে কাঁচা। যদি আপনি ঘুমাতে যাওয়ার আগে মধু দিয়ে এক গ্লাস দুধ পান করতে চান তবে নিশ্চিত হন গ্লাসের দুধ পুরোপুরি ঠাণ্ডা কি-না। যদি পুরোপুরো ঠাণ্ডা হয় তাহলেই কেবল এর সঙ্গে মেশান এক চা চামচ মধু।
৬। রাসায়নিক অবশ্যই বাদ দিতে হবে
মধুর তাপমাত্রা কেন বাড়ানো যাবে না তার যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে। যখন আপনি সুগারযুক্ত কোনো উপাদানে তাপ দেবেন তখন এটি ৫-হাইড্রক্সাইমিথাইলফুরফুরাল বা এইচএমএফ নামের রাসায়নিক উৎপন্ন করে যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
৭। কেন গরম নয়
মধুর স্বাভাবিক তাপমাত্রা ১৪০ ডিগ্রির কম, যা আপনার দুধের গ্লাসের চেয়ে অনেক কম। যখন আপনি গরম দুধে মধু মেশাবেন তখন এর উপাদানগুলো বিষাক্ত হয়ে ওঠে যা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া